সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৫২ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী:
রাজশাহী রাণীনগর নৈশ উচ্চ বিদ্যালয়ের কৃষি শিক্ষক মোঃ সোয়ায়েব আলী গত ৭দিন যাবত কারাগারে রয়েছেন। কিন্তু রহস্যজনক কারনে তার বিরুদ্ধে কোন প্রকার শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে অনিয়ম ও দূর্নীতি’তে ভরা স্কুলটি’র আরও একটি অনিয়ম সামনে এসেছে।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন যাবত একই স্কুলের শিক্ষিকাকে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়া অভিযোগে শিক্ষিকার দায়ের করা মামলায় গত বুধবার (২২ নভেম্বর) রাতে মোঃ সোয়ায়েব আলীকে গ্রেফতার করেছে মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। কিন্তু বিজ্ঞ আদালত তাঁর জামিন না মঞ্জুর করে কারগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। সেই থেকে কারাগারে রয়েছেন শিক্ষক সোয়ায়েব আলী। অথচো তার বিরুদ্ধে স্কুল কমিটি থেকে কোন শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় নাই। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। একাধিক স্থানীয়রা জানান, ১৩/১৪ শত শিক্ষার্থীর স্কুলে বর্তমানে ১৬ থেকে ১৭ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। স্কুলে পাঠদান যেমন তেমন আড্ডা, মিটিং আর একে অপরের পেছনে লেগে থাকাই তাদের নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ১০০ জনেরও বেশি হিন্দু ছাত্র/ছাত্রী দেখিয়ে নিয়োগ দেয়া হয়েছিলো কাব্যতীর্থের শিক্ষক ববিতা শাহ’কে। কিন্তু স্কুলটিতে কোন হিন্দু শিক্ষার্থী নাই। কাব্যতীর্থের শিক্ষক মাসে মাসে সরকারী অর্থ গিলছেন ঠিকই। কিন্তু শিক্ষার্থী স্কুলে আনতে হবে, এ নিয়ে তার কোন মাথা ব্যাথা নেই। স্কুলের ক্রিড়া শিক্ষক মোঃ আকরাম আলী সরকার। তিনি আবার খুব রাগী মানুষ। তার বিষয়ে কিছু বলা যাবে না। কারন তার বাড়ির পাশে নিজ এলাকায় স্কুল। তাই তিনি স্কুলটিতে এ্যাসেমবিø করান না। জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়না। খেলা ধুলার কোন কার্যক্রম নাই। ক্রিড়া খাতে তার কোন অবদান নেই। কিন্তু গত প্রায় ২০ বছর যাবত সরকারী অর্থ গিলছেন এই ক্রিড়া শিক্ষক। তাছাড়া ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তারই আপন বোন তাই তাকে ধরবে কে। সরকার কর্তৃক বাতিল আমেরিকা বাংলাদেশের সার্টিফিকেট নিয়েও কেউ কেউ শিক্ষক হয়েছেন। তবে সব কিছুুই দূর্নীতির মাধ্যমে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে সম্ভব হয়েছে, বিগত ১৫/১৬ সালের কমিটির হাত ধরে। নিয়োগকে কেন্দ্র করে মারামারি-প্রধান শিক্ষককে মারধর। বোয়ালিয়া থানায় জিডি-সহ বিস্তর অভিযোগের শেষ নেই এই স্কুলে। এত অনিয়ম দূর্নীতির মধ্যেও স্থানীয়রা চাওয়া স্কুলটিতে ছিন্নমুল, হতদরিদ্র, দিনমুজুর ছাত্র/ছাত্রীদের পাঠদান দেয়ার পরিবেশ সৃষ্টি করা হোক। শিক্ষকরা ছাত্র/ছাত্রীদের স্কুলে আনতে ফিল্ড ওয়ার্ক করুক। কিন্তু সেই উদ্দ্যোগ তাদের মধ্যে একেবারেই নেই। তাই থার্ডক্লাশ, দূর্বল, নামে মাত্র প্রতিষ্ঠানের সার্টিফিকেটধারী শিক্ষকদের বহিস্কার দাবি তাদের। দক্ষ ও মজবুত সার্টিফিকেট-ধারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগ এবং স্কুলের নতুন কমিটিতে সৎ, যোগ্য ও ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মানুষকে সভাপতি করার দাবি জানান স্থানীয়রা। সেই সাথে স্কুলে দূর্নীতির মাধ্যমে প্রবেশ করা সকল শিক্ষকদের বহিস্কারের দাবি জানান তারা।
কৃষি শিক্ষকের বিষয়ে জানতে চাইলে রাণীনগর নৈশ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত), মোসাঃ আনোয়ারা খাতুন জানান, সভাপতিকে ডেকে মিটিং করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। ৭দিনেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি কেন? এমন প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান তিনি।
একই বিষয়ে স্কুলের সভাপতি মোঃ আব্দুল করিম এর নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান, শিক্ষা বোর্ডকে অবগত করা হয়েছে। ডিডি, ডিও সাহেবকে অবগত করা হবে। মিটিং ডেকে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যপারে জানতে চাইলে জেলা শিক্ষা অফিসার (ডিও) মোঃ নাসিরুদ্দিন জানান, স্কুল থেকে সঠিক তথ্য আমাকে দেওয়া হয়না। স্কুলের প্রধান শিক্ষক, কমিটির সভাপতি’র কাছে জানুন। তিনি আরও বলেন, ডিডি ম্যাডাম বিষয়টি দেখছেন উনার সাথে যোগাযোগ করুন।
জানতে চাইলে উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা রাজশাহী অঞ্চল (ডিডি) ড. শরমিন ফেরদৌস চৌধুরী বলেন, জেলা শিক্ষা অফিসার (ডিও) বরারর একটি অভিযোগ জমা দিন। বিষয়টি আমি দেখবো।